হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন আজ । সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার ৭৮টি ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণে ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, ভোটাররা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ক্যামেরা সহ কোনো ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস নিতে পারবেন না। এগুলো বাহিরে রেখে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এই নির্বাচনে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী (প্রতীক-ঘোড়া),মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলেয়া আক্তার (প্রতীক-আনারস), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মো. নুরুল হক (প্রতীক-চশমা) ও মো. ফরিদ আহমেদ তালুকদার (প্রতীক-মোটরসাইকেল) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে জেলার ৯টি উপজেলা, ৫ পৌরসভা ও ৭৮ ইউনিয়ন পরিষদের মোট ভোটার (জনপ্রতিনিধি) ১ হাজার ১০৪ জন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ সাখাওয়াত হাসান জীবন এর বড় ভাই এডভোকেট আহমদুল হাসান কামাল ইন্তেকাল করেছেন ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাইহি রাজেউন। গতকাল রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন। আজ বাদ আসর বানিয়াচং কামালখানি গ্রামের হাসান মঞ্জিলে মরহুমের জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নবীগঞ্জ উপজেলায় বড়বোনের স্বামীর লাঠির আঘাতে ছোটবোনের স্বামী বাবলু মিয়া (২৫) নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড় ভাকৈর পূর্ব ইউনিয়নের বাগাউড়া গ্রামে জানাযার নামাজ শেষে বাবলু মিয়াকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত বাবলু মিয়া (২৫) বাগাউড়া গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশ জানায়- বড় ভাকৈর পূর্ব ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের আব্দুল হামিদের বড় মেয়ে সাবিনা বেগমের বিয়ে হয় একই গ্রামের আকবর মিয়ার সঙ্গে ও ছোটমেয়ে নাঈমা বেগমের বিয়ে হয় বাগাউড়া গ্রামের বাবলু মিয়ার সঙ্গে। বাবলু মিয়া (২৫) সিলেটের জাফলংয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বাগাউড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আসেন বাবলু। বাড়িতে এসে স্ত্রী নাঈমাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে বাবলু পাশ্ববর্তী হরিনগর গ্রামের ভায়রা ভাই আকবর মিয়ার বাড়িতে যান। আকবর মিয়ার বাড়িতে তার স্ত্রী নাঈমাকে খুঁজে পান বাবলু। এসময় স্ত্রীর কাছে বাড়িতে না থাকার কারণ জানতে চায় বাবলু মিয়া। এনিয়ে স্ত্রী নাঈমার সঙ্গে বাবলু মিয়ার বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ভায়রা আকবর মিয়ার সঙ্গেও বাগবিতণ্ডায় জড়ায় বাবলু। এ সময় ভায়রা আকবর মিয়া লাঠি দিয়ে বাবলু মাথায় আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বাবলু। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাবলুকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল শুক্রবার ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবলু মিয়ার মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে সিলেটে ময়নাতদন্ত শেষে বাবলু মিয়ার মরদেহ নিয়ে আসায় হয় গ্রামের বাড়িতে। পরে বিকেলে জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ প্রসঙ্গে বড় ভাকৈর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার মিয়া ছুবা বলেন- গত কয়েকদিন আগে আকবর মিয়া ও বাবলুর মধ্যে ঝামেলা হয়, এসময় আকবর লাঠি দিয়ে বাবলুর মাথায় আঘাত করলে বাবলু গুরুতর আহত হয়। পরে বাবলুকে সিলেট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শুক্রবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবলু মারা যায়। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন- গত ৫ মার্চ দুই ভায়রা ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে বাবলু মিয়া গুরুতর আহত হয়, শুক্রবার ভোরে সিলেটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবলু মিয়া মারা যায়। তিনি বলেন- অভিযোগ পেয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শুক্রবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্র তাহসিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার মা সহ পরিবার- পরিজনকে দেখতে যান নবীগঞ্জ- বাহুবল আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম কুমার দাশ, সহকারী ভূমি শাহিন দেলোয়ার, নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুক আলী, সহ আরো অনেকেই। নিহত তাহসিনের মাকে এমপি শান্তনা দিয়ে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন যাহাতে দ্রুত প্রকৃত আসামীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা যায়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নবীগঞ্জ উপজেলার ৬নং কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান ও পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আনমুনু গ্রামের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় ৩টি ব্যাংক ও মার্কেটসহ অর্ধশতাধিক দোকানপাঠ ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সহ ৮ জন পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিকসহ শতাধিক লোকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪৫ রাউন্ড টিয়ারসেল ও ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী বলেন, পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতে মা বাদী হয়ে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের আসামীদের ধরতে আমরা আলাদা একটি টিম গঠন করেছি। আসামীদের গ্রেফতার করতে আমাদের পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।