নবীগঞ্জ উপজেলায় কলেজ ছাত্র সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিন (১৮) হত্যার ঘটনার ৫ দিনের মাথায় ১১ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরও ৪-৫ জনকে। গতকাল রোববার রাতে নিহত সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিনের মা মুড়াউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী- শিক্ষাকা মাহফুজা সুলতানা বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলো- নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের হেবলু মিয়ার ছেলে মান্না মিয়া (২০), আলাউর মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২১), আনমনু গ্রামের রুমন মিয়ার ছেলে রিহাত মিয়া (২১), রাজাবাদ গ্রামের কুদরত আলীর ছেলে শাফি মিয়া (২০), গন্ধ্যা গ্রামের লেবু মিয়ার ছেলে রিমন মিয়া (২২), নিজ চৌকি গ্রামের হাকিম মিয়ার ছেলে জাকির মিয়া (২০), মাইজগাঁও গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে লাদেন মিয়া (২০), দত্তগ্রামের আব্দুল হাফিজের ছেলে সাজু মিয়া (২৫), গন্ধ্যা গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে সাজ্জাত মিয়া (২৪), মিল্লিক গ্রামের মন্নান মিয়ার ছেলে রাতুল মিয়া (২৩), বানিয়াচং উপজেলার কালাইনজুরা গ্রামের মৃত আরজদ উল্লাহর ছেলে মওদুদ আহমেদ (৪০)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়- সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিন (১৮) নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচ.এস.সি ২য় বর্ষে শিক্ষার্থী। সাক্ষী নিহাল আহমেদ মাহি তাহসিনের খালাতো ভাই ও সহপাঠি। আসামীদের কয়েকজন নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র। অন্যরা লেখাপড়া করে না। তবে আসামীদের সহপাঠি হিসাবে তারা এক সাথে চলাফেরা করে। আসামী মান্নাসহ অন্যরা তাহসিনকে তাদের সাথে চলাফেরা করার জন্য বলে। কিন্তু আসামীদের চালচলন, কথাবার্তা ও আচরণ উশৃংখল প্রকৃতির দেখে তাহসিন তাদেরকে এড়িয়ে চলে। এজন্য আসামীরা তাহসিনের উপর ক্ষিপ্ত হয়। তাহসিন গত ২৭ ফেব্রুয়ারী সকালে বাসা থেকে বের হয়ে এইচ.এস.সি নির্বাচনী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কলেজে যায়। নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালীন আসামীদের মধ্যে কয়েকজন তাহসিনের পরীক্ষার খাতা দেখানোর জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তাহসিন তার পরীক্ষা ভাল করার জন্য তাদের কথায় খাতা দেখায়নি। পরীক্ষার পর কলেজের সামনে মাঠে মান্না, জুয়েল, রিহাত ও রাতুল পরীক্ষার হলে খাতা না দেখানোর কারণে তাহসিনকে অপমান করে। এক পর্যায়ে তারা তাহসিনের মুখে ও শরীরে থুথু নিক্ষেপ করে। তাহসিন প্রতিবাদ করলে মান্নাসহ অন্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে কলেজের সিনিয়র ছাত্রদের হস্তক্ষেপে তাহসিন কলেজ ত্যাগ করে বাসায় চলে আসে। বিকেলে তাহসিন মাহিকে নিয়ে চা খাওয়ার জন্য নবীগঞ্জ শহরে রাজা কমপ্লেক্স নামক মার্কেটের পিছনে একটি চায়ের দোকানে চা খেতে যায়। চা খাওয়া অবস্থায় আসামী মান্নাসহ অন্যরা তাহসিনকে লক্ষ্য করে গালি-গালাজ করে। পরে তাহসিনকে মারপিট করার জন্য উদ্যেত হয় তারা। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে সরিয়ে দেয়। পরে তাহসিন মাহিকে নিয়ে নবীগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক আয়োজিত বই মেলা দেখার জন্য পৌরসভা প্রাঙ্গণে যায়। রাত ৯টায় বইমেলা থেকে ফেরার পথিমধ্যে তাহসিন ও মাহি ওসমানী রোডস্থ চৌদ্দ হাজারী মার্কেটের সামনের পৌছামাত্রই মান্নাসহ অন্যসকল আসামীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র, দা, লাঠি, লোহার রড, পাইপ, চাকু ছুরিসহকারে তাহসিন ও মাহির উপর হামলা করে। এ সময় তাহসিনকে সারা শরীরে আঘাত করে পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় তাহসিনকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে মাহিকেও বেধরকভাবে মারধোর করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাহসিন ও মাহিকে উদ্ধার করে প্রথমে নবীগঞ্জ ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাহসিন মারা যায়। পরে বুধবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ জেকে উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযার নামাজ শেষে তাহসিনের গ্রামের বাড়িতের দাফন সম্পন্ন হয়। এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন- তাহসিনের মা বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে, আমরা মামলা রুজু করে গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছি, আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
নবীগঞ্জ শহরে সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে এক গৃহবধুকে অপহরনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ সময় স্থানীয় জনতা অপহরণের চেষ্টাকারী দুরুদ মিয়াকে ছোরাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। নামে এক যুবক। আটককৃত দুরুদ মিয়া উপজেলার ছোট সাকুয়া গ্রামের জিতু মিয়ার ছেলে।স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের ছোট সাকুয়া গ্রামের জিতু মিয়ার ছেলে দুরুদ মিয়া কয়েক বছর আগে বিয়ে করেন নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কানাইপুর গ্রামের আয়াত আলীর মেয়ে জাইরুন বেগমকে। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিভিন্ন কারণে জাইরুন বেগম বছর খানেক পুর্বে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে দুরুদ মিয়াকে তালাক প্রদান করে। এক পর্যায়ে উভয়ের পরিবার ও মুরুব্বীয়ান কাজীর মাধ্যমে তালাক রেজিষ্ট্রার সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে দুরুদ তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী জাইরুন বেগমকে নেয়ার জন্য চেষ্টা চালায়। এতে জাইরুন রাজি না হয়নি। এ নিয়ে একাধিক শালিস করে মুরুব্বীয়ানরা জাইরুনও পরিবারকে হুমকী প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য দুরুদকে বলেণ দেয়া হয়।জাইরুনের পরিবারের অভিযোগ, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জাইরুন বেগমের মেয়ে অসুস্থ মেয়েকে বোন সুহেনা বেগম, খালেদা বেগম ওসমানী রোডে ডাক্তারের নিকট নিয়ে আসে। চিকিৎসা শেষে রিক্সার জন্য তারা অপেক্ষা করছিল। এ সময় একটি দুরুদ মিয়া সহযোগিদের নিয়ে একটি মিশুক থেকে জাইরুনের মেয়েসহ সুহেনা বেগমকে অপহরণ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুরুদ মিয়াকে আটক করে। এ সময় তার নিকট থেকে একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে দুরুদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নবীগঞ্জ সংবাদ। নবীগঞ্জে কলেজ ছাত্র সৈয়দ তাহসিন হত্যাকান্ডের ঘটনা’কে কেন্দ্র করে দু’ গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক লোজ আহত হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি দোকান পাট ভাংচুর, মটর সাইকেলে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরে বাহুবল সার্কেল এসপি আবুল খয়ের, ইউএনও এর নেতৃত্বে দাঙ্গা পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কটোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষ চলাকালে শহরে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।বিভিন্ন প্রাপ্ত সুত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার রাতে কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদের মালিকাধীন রাজা কমপ্লেক্সের পিছনে ফুড কর্নারে দু’দল কলেজ ছাত্রদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনাটি আনমনু গ্রামের কয়েকজন যুবক সমাধা করে দেন। এই খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদ তার মাকের্টের ভিতরে কেন ঘটনা ঘটলো এনিয়ে আনমনু গ্রামের লোকজনদের উদ্দেশ্য করে গালমন্দ করেন এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কথা বার্তা বলেন। এর প্রতিবাদ করেন আনমনু গ্রামের কতিপয় যুবক। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এদিকে চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদ তার মালিকানা গোল্ড ব্রিকফিল্ট থেকে একাধিক ট্রাক দিয়ে ইট, কাচের বোতলসহ প্রচুর লোকজন নিয়ে আসেন। তারা রাজা কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় অবস্থান করে বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। জবাবে আনমনু গ্রামের লোকজনও নীচ থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।এ সময় চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমানের নিজ গ্রাম এনাতাবাদের লোকজন কাউন্সিলর নানু মিয়ার মোটর সাইকেলে অগ্নি সংযোগসহ ৩টি সাইকেল ভাংচুর করে। কাউন্সিলর নানু মিয়ার দোকানসহ একাধিক দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পাল্টা হামলায় রাজা কমপ্লেক্সের গøাস ভাংচুর করা হয়। প্রকাশ্যে একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রাম থেকে লোকজন এনে শহওে রণক্ষেত্রের ঘটনায় শহর জুড়ে আতংক সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড কাদাঁনো গ্যাস নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেনি। এক পর্যায়ে বাহুবলের সার্কেল এসপির নেতৃত্বে হবিগঞ্জ থেরেক একদল দাঙ্গা পুলিশ আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানসহ এনাতাবাদের লোকজনদেও পুলিশ প্রহরায় শহর থেকে বিদায় করে দেয়া হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে নবীগঞ্জ- বাহুবল আসনের এমপি এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী পরিস্থিতি শান্ত করতে ফোনে বক্তব্য রেখে পরিস্থিতি স¦াভাবিক করার চেষ্টা করেন। এসময় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা অনুমপ দাশ,সহকারী কমিশনার ভূমি সাহিন দেলোয়ার,ওসি মাসুক আলী,নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ইউপি চেয়াম্যান এমদাদুর রহমান মুকুল, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান সেফু, জেলা পরিষদের সদস্য শেখ সফিকুজ্জামান শিপন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ মিলু, ইউপি চেয়ারম্যান, নির্মেলেন্দু দাশ রানা, নোমান আহমদ সাবেক জেলা পরিষদে সদস্যর আঃ মালিক সাবেক প্যানেল মেয়র এটিএম সালামসহ সাংবাদিক জনপ্রতিনধি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সংঘর্ষেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে অপ্রাণ প্র্রচেষ্টা করেছেন।
নবীগঞ্জ থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে হত্যা মামলার আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানাধীন শান্তিভাগ এলাকা থেকে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৩নং পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলীর দিক-নির্দেশনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) দিলীপ কান্ত নাথ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স সহ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৩নং পলাতক আসামী বড় ভাকৈর গ্রামের মাসুক মিয়ার পুত্র সজলু মিয়া (২০) বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী।
নবীগঞ্জে এলাকার পূর্ব বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিত হামলা করে এক কাপড় ব্যবসায়ীর নগদ ৫ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে একদল দুর্বৃত্তরা। গত সোমবার সন্ধ্যায় বাউশা ইউনিয়নের বাশডর (দেবপাড়া) এলাকার বিজনা নদীর চড়ে এই হামলা ও ছিনতাইর ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখিত ঘটনায় বাশঁডর গ্রামের মৃত জাহিদ উল্লার পুত্র আব্দুল বাছিত ৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরনসূত্রে জানাযায়, আব্দুল বাছিত ও আব্দুল মুকিত এর মাঝে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আব্দুল বাছিত বাঁশডর (দেবপাড়া) বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী। কাপড়ের ব্যবসার সুবাদে প্রায় সময় তিনি ঢাকা থেকে কাপড় কিনে এনে এলাকার বাজারে বিক্রি করেন। গত-১৯ ফেব্রুয়ারি কাপড় ক্রয় করার জন্য আউশকান্দি এনা কাউন্টার থেকে সিএনজি চালক সুফল মিয়ার মাধ্যমে একটি টিকেট ক্রয় করেন। সিএনজি চালককে সাথে নিয়া আউশকান্দি কাউন্টারের যাওয়ার পথ্যিমধ্যে বাউসা ইউনিয়নের বাঁশডর (দেবপাড়া) সাকিনস্থ জনৈক মাসুক মিয়ার বাড়ীর নিকট বিজনা নদীর চড়ে উল্লেখিত বিবাদী বাঁশডর (দেবপাড়া) গ্রামের আব্দুল মুকিদ,নুরুল হক,হোসাইন মিয়া,রাজা মিয়াগংরা গাড়ীর পথরোধ করে। গাড়ী থামানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে বিবাদীগণ আব্দুল বাছিতকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আব্দুল বাছত প্রতিবাদ করতেই তার উপর হামলা চালিয়ে তার কাছে থাকা কাপড় ক্রয় করার নগদ ৫ লক্ষ টাকা চিনিয়ে নিয়ে যায়। আব্দুল বাছিতের আত্ন চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীগন তাকে প্রাণে হত্যার হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। সিএনজি চালক সুফল মিয়া তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। ঘটনায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী বলেন,অভিযোগ পেয়ছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ হবিগঞ্জের রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে নতুন কূপের গ্যাস সঞ্চালনের উদ্বোধন করেছেন। এ কূপের উদ্বোধনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে নতুন করে যুক্ত হলো আরও ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের বিষয় খতিয়ে দেখতে পূনঃরায় ভূকম্পন তদন্ত কমিটিগঠন করা হয়েছে। দিন ব্যাপী ওয়েন্টিশন কোর্স অনুষ্ঠিত হয়।বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্টে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে ঢাকা বিভিন্ন গন মাধ্যমের ৩৪ জন সাংবাদিক ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশ গ্রহন করেন। পরে বিবিয়ানা অপটিমাইজেশন প্রজেক্টের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি এই কূপ দুটির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া, জেলা প্রশাসক মোছাঃ জিলুফা সুলতানা।
উদ্বোধনের পর গ্যাস ফিল্ডের ২ ও ৯ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এতে গ্যাসক্ষেত্রটির উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ মিলিয়ন ঘনফুটে।এ বিষয়ে গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের (এসজিএফসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কূপ-২ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ ছিল। ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে উৎপাদন উপযোগী করা হয়েছে। ওই কূপ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে এ পরিমাণে গ্যাস পাওয়ার নজির খুবই কম উল্লেখ করে মিজানুর রহমান আরও বলেন, ৯ নম্বর কূপটি নতুন, সেখানে পাইপলাইন না থাকায় গ্যাস উত্তোলন করা যাচ্ছিল না। এর আগে মন্ত্রী রোববার দুপুরে সিলেট থেকে রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে আসেন। রশিদপুর ২ নম্বর কূপের ওয়ার্ক ওভার পরিদর্শন ও রশিদপুর ৯ নম্বর কূপের গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন প্রকল্প কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে রশিদপুর তিন হাজার বিপিডি সিআরইউ প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন।পরে মন্ত্রী নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের করিমপুরে অবস্থিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে যান। সেখানে শেভরনের ওপর দিন ব্যাপী ওরিয়েন্টশন ও উপস্থাপনা, শেভরনের কন্ট্রোল রুম বুস্টার ক¤েপ্রসর এবং টার্বো এক্সপেন্ডার পরিদর্শন উপস্থাপনা (টিইএক্স, বিসি, প্ল্যান্ট ওভারভিউ, রিগ অপারেশন এবং পাইপলাইন প্রেসার অপ্টিমাইজেশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ । এসময় বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে ঢাকা বিভিন্ন গন মাধ্যমের ৩ ৪ জন সাংবাদিক ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশ গ্রহন করেন। দিন ব্যাপী ওয়েন্টিশন কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিবিয়ানা অপটিমাইজেশন প্রজেক্টের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের দেন। তিনি বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড এলাকায় কি পূর্বেকয়েক দফায় ভুমি কম্পনের ফলে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তিনি আমলে না নিয়ে তিনি নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ১০ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সিনিয়র সচিব(উন্নয়ন) মোঃ হুমায়ুন কবিরকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত রিপোর্ট প্রধান করবেন। এবং ভুমি কম্পনে ক্ষতি গ্রস্থ বাড়ি ঘরে তালিকা করার জন্য আলাদা ভাবে শেভরনের মাধ্যমে আরেকটি কমিটি গঠন ও তালিকা প্রণয়ন করার জন্য বলা হয়। তদন্ত কমিটি গঠনের সময় উপস্থিত ছিলেন, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোছাঃ জিলুফা সুলতানা,নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম কুমার দাশ অনুপ,নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোমান হোসেন, আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলওয়ার হোসেন,দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ছালিক মিয়া প্রমূখ।
নবীগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কে চলতি বছর ড্রেন নির্মাণের মেগা প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে নবীগঞ্জ থানা রোডে প্রায় ৩ শত ফুট পুরাতন ড্রেনের উপরই কাজ শেষ করতে যাচ্ছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। ওই ড্রেন না ভেঙ্গেই পুরাতন ড্রেন বহাল রেখে উপরে কিছু কাজ করে টাইলস বসানো হচ্ছে। এতে কমপক্ষে ৫/১০ লাখ টাকা বাচালো ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। নীরব রয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টকর্তা ব্যক্তিরা। এছাড়া নির্মিত ড্রেন গুলোতে নি¤œমানের মালামাল ব্যবহারেরও অভিযোগ উঠেছে। সুত্রে জানাযায়, চলতি বছর নবীগঞ্জ পৌর শহরের জলবদ্ধতা দুরীকরনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক মেগা প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৫ কোটি টাকার ড্রেন নির্মানের কাজ হাতে নেয়। সিলেটের একটি টিকাদারী প্রতিষ্টান কাজটি পেয়ে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। উক্ত ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ হলে শহরের জলবদ্ধতা অনেকটাই কমে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা পৌর কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের। তবে এই বিশাল প্রকল্পের কাজে চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি। নিম্ব মানের মালামাল ব্যবহারসহ যথাযথভাবে কাজ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাগরিক সমাজ। কাজ গুলো দেখা শুনার দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ বিভাগ, হবিগঞ্জের থাকলেও তাদের তদারকি হচ্ছে নামমাত্র। টিকাদারী প্রতিষ্টান তাদের ইচ্ছমতো কাজ শেষ করতে যাচ্ছেন। এদিকে নবীগঞ্জ থানা রোডে প্রায় ৩ শত ফুট পুরাতন ড্রেন না ভেঙ্গে উপরের অংশে কিছু কাজ করেই টাইলসের কাজ শুরু করেছেন টিকাদারী প্রতিষ্টান। কার স্বার্থে এমনটা হয়েছে তা বুঝা মুশকিল। কিন্তু নীরবতা পালন করতে দেখা গেছে তদারকির দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃপক্ষকে। বিষয়টি হতভাক করেছে পৌর নাগরিকদের। উক্ত বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ।